নীলনদরে পানি প্রবাহ শেষ হয় না, পিড়ামিডের পাথরখণ্ড ক্ষয়ে পড়ে না কন্তিু ফেরাউনের উত্তরসূরী র্বতমান মিশরীয়দের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাদরে নিজস্ব ঐতহ্যি, নিয়ম, রীতি ও র্ধমানুসারে সমাহিত করা হয়, যা বাংলাদেশীদের থেকে কিছুটা ভিন্ন।
র্দীঘকাল থেকে বৈবাহিক ও কর্মসূত্রে অনেক বাংলাদশি একা বা সপরিবারে বসবাস করে আসছে এই দেশে। স্বাভাবিক ভাবেই, এদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের মধ্যওে কেউ কেউ অকস্মাৎ বা রোগে মৃত্যু বরণ করেন। প্রবাসীদরে মধ্যে যারা মিশরে মৃত্যুবরণ করেন তাদেরকে স্থানীয়ভাবে মিশরে দাফনের কোনো ব্যবস্থা এত দিন ছিল না। ফলে বাংলাদেশ দূতাবাস তথা কমিউনিটিকে নানা ধরনরে সমস্যায় পড়তে হতো। বড় অঙ্করে টাকা জোগাড় করে তাদরে মৃতদেহ স্বদশেে পাঠানো হতো। কিন্তু টাকার সংকুলান না হলে কিংবা স্থানীয় ভাবে দাফনে সমস্যা হলে নানাবধি জটিলতার সৃষ্টি হতো। ইতোর্পূবে দুইজন মিশর প্রবাসী বাংলাদেশীর মৃতদেহ দেশে প্রেরণ করা সম্ভব হয়নি বিধায় তাদরেকে মিশরীয়দের কবরস্থানে তাদের নিয়ম ও র্শতে দাফন করতে হয়ছে। যা, মৃত ব্যক্তির স্বজনদের কাছে পছন্দের হয়নি।
এই দুরবস্থার অবসানকল্পে বাংলাদেশ দূতাবাস কবরস্থানের জন্য জমি কেনে। র্অথ বরাদ্দ না থাকায় রাষ্ট্রদূতরে অনুরোধে প্রবাসীদরে মধ্যে (নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক) একজন দানশীল ব্যক্তি এই মহতী কাজে এগিয়ে আসেন। তার সম্মতিতে ও রাষ্ট্রদূতের মধ্যস্থতায় মিশর প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য নিজস্ব একটি কবরস্থান কেনার সিদ্ধান্ত নেন।
কায়রো মহানগরীর র্পূবদিকে সরকারী ভাবে নির্ধারিত উবুর এলাকায় অবস্থিত কবরস্থানে বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য ৬০ র্বগমিটার মাপের একটি কবরস্থান ক্রয় করা হয়। উক্ত কবরস্থানে প্রবাসে মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশীদের আমাদের দেশের রীতি অনুযায়ী ও ধর্মীয় আচার মেনে প্রবাসীদের লাশ দাফন করা হবে।
গত ১২ মে বরিশাল জেলার আবুল কালাম আজাদ নামে একজন মিশর-প্রবাসী বাংলাদেশী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কায়রোস্থ নসর সিটি হাসপাতালে মৃত্যবরণ করেন। আজাদ পোশাক শিল্পের শ্রমিকের কাজ নিয়ে ২০১২ সালে মিশরে এসেছিলেন। পরর্বতীতে সে নিজস্ব দোকান দিয়ে কাপড় সেলাই এর কাজ করতেন।
আল-আজহার বশ্বিবদ্যিালয়ে অধ্যয়নরত তার একমাত্র ছেলে ইকরামা ফাইয়াদের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলামের নির্দেশে জানাজা ও সকল আনুষ্ঠানিকতার পর ১২ মে ২০২২ রাত নয়টায় তার লাশ দাফন করা হয়। এ সময় মৃত ব্যক্তির পরিবার, নাসর সিটিতে বসবাসরত প্রবাসী, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দুতাবাসের কর্মকর্তা ও
কর্মচারীবৃন্দ।
মিশরে আল- আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগঠনের সাবেক সভাপতি শরিফ উদ্দিন আব্দুল মান্নান বলেন, মিশরে কোন প্রবাসী মৃত্যুবরণ করলে দেশে লাশ পাঠানোর বিড়ম্বনার শেষ ছিল না। মৃত প্রবাসীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ, এ দেশের আইনী জটিলতা ও লাশ বহনের অতিরিক্ত বিমান ভাড়া জোগাড়, সব মিলিয়ে দিনের পর দিন এমন কি কখনো কখনো মাসের পর মাস প্রবাসীর লাশ পরে থাকত হাসপাতালের মর্গে। বাংলাদেশ দুতাবাসের বর্তমান রাষ্ট্রদূত জনাব মনিরুল ইসলামের আপ্রাণ প্রচেষ্টা ও নাম প্রকাশে একজন প্রবাসীর দানে বাংলাদেশীদের জন্য কিনা নিজস্ব কবরস্থানে মৃত প্রবাসী আবুল কালাম আজাদরে লাশ আমাদের দেশের রীতি অনুযায়ী দাফন করতে পেরে স্বস্তিবোধ করছি ও সেই দানবীর ব্যক্তি ও মান্যবর রাষ্ট্রদূত এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মিশরে বাংলাদেশী সব্জি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘তাজা এগ্রো’র কর্ণধার আলমগীর হোসেন বলেন, মিশরে কোন প্রবাসী মৃত্যুবরণ করলে বিভিন্ন জটিলতায় দেশে লাশ পাঠানো অনেক বিলম্বিত হত। এই দেশের আইনি জটিলতা ছাড়াও প্রবাসী মৃত্যু বেক্তির আর্থিক সচ্ছলতা না থাকা, দেশে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ, লাশ বহনের মাত্রাতিরিক্ত বিমান ভাড়া জোগাড়, সব মিলিয়ে দিনের পর দিন এমন কি কখনো কখনো মাসের পর মাস প্রবাসীর লাশ পরে থাকত কোন হাসপাতালের মর্গে।