ইতালিতে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ। বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ উপলক্ষে ১৮মে এক আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সঙ্গে পিঠা উৎসব, সুমধুর গান, দৃষ্টিনন্দন নাচ এবং ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবারের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় বর্ণিল আয়োজনে।
অনুষ্ঠানে ইতালির পররাষ্ট্র ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, রোমে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দ, ইতালির সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং বাংলাদেশের অনারারী কনসালগণ এবং দূতাবাস ও মিলান কন্স্যুলেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান ও তাঁর সহধর্মিণী পেন্ডোরা চৌধুরী আমন্ত্রিত অতিথিদের বৈশাখের উত্তরীয় দিয়ে উষ্ণভাবে বরণ করে নেওয়া হয়।
দূতাবাসের সামনের সড়কে আয়োজিত বাংলার ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রায়ও প্রচুর বিদেশি অতিথিসহ দূতাবাস পরিবারের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রদূত তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাঙালি সংস্কৃতির দীর্ঘ ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনীতিক উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মানবজাতির বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (Intangible Cultural Heritage) হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এশিয়া বিভাগের সেন্ট্রাল ডিরেক্টর মিনিস্টার আলেসান্দ্রা স্কিয়াভো (Alessandra Schiavo) অনুষ্ঠানে “গেস্ট অব অনার” হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে ইতালিতে বসবাসকারী বাংলাদেশ কমিউনিটির ভূয়সী প্রসংসার পাশাপাশি তাদের স্বকীয়তা ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন (Keynote Speech) ইতালির লুমসা (Lumsa) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট বন্ধু ডঃ ফ্রান্সেস্কো জানিনি (Dr. Francesco Zanini)। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের যে প্রচলিত রীতি, তা হাজার বছরের বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালনের এক অনন্য নিদর্শন।
আলোচনা সভার পরে প্রবাসী বাংলাদেশী ও ইতালিয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিশেষত ইতালিয় শিল্পীর কণ্ঠে বাংলা গান অতিথিদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে ঐতিহ্যবাহী রকমারী বাংলাদেশী খাবারে আপ্যায়িত করা হয়। দূতাবাস প্রাঙ্গনে স্থাপিত পালকি, মেহেদী, পান ও ঝাল-মুড়ির স্টল ও পিঠা ঘর উপস্থিত বিদেশী অতিথিবৃন্দের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়।